কোন কিছুর ওপর মুল্য আরোপ করার প্রক্রিয়া মূল্যায়ন।
শিক্ষার্থীর বিকাশ কিন্তু সর্বাঙ্গীণ হওয়া প্রয়োজন,
তাই সমস্ত দিকের বিকাশ সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ করার জন্য আমাদের সাহায্য নিতে হয় মূল্যায়নের।
🛑 শিক্ষার্থীদের সম্পাদিত আচরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করার প্রক্রিয়া হলো মূল্যায়ন।
🛑তবে মূল্যায়নে শুধুমাত্র বর্তমান উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় তা নয়, ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী কিরূপ আচরণসম্পাদন করতে সমর্থ হবে, তাও কিন্তু বিবেচনা করা হয, অর্থাৎ বলা যেতে পারে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সাহায্যে শিক্ষার্থীর আচরণকে অতীতের সম্পাদনা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করে মূল্য আরোপ করা হয়।
এক কথায়
মূল্যায়ন হল সার্বিক নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা এবং উপায, যার দ্বারা কাঙ্খিত উদ্দেশ্যগুলো পরিমাণগত গুণগতভাবে কতখানি বাস্তবায়িত হয়েছে তা পরিমাপ করা হয়।
মূল্যায়নের বৈশিষ্ট্য
১. উদ্দেশ্য ভিত্তিক কার্যাবলী নিয়ে গঠিত। শিক্ষা ক্ষেত্রে মূল্যায়নের উদ্দেশ্য যথেষ্ট ব্যাপক।
২. একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া।
৩. মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে কোন বিষয়ের পরিমাণগত ও গুণগত বিচার করা হয়।
৪. মূল্যায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা সম্পন্ন করতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়।
৫. মূল্যায়নে শিক্ষার্থীর প্রাথমিক আচরণ অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তী আচরণ ও অভিজ্ঞতাকে বিবেচনা করা হয়।
৬. মূল্যায়নের মধ্যে দিয়ে কেবলমাত্র শিক্ষার্থীর নয় শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক মূল্যায়ন করা হয়।
৭. মূল্যায়নের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর সামাজিক মানসিক দৈহিক প্রাক্ষোভিক ও শিক্ষাগত দিক বিবেচনা করা হয়।
৮. শিক্ষার্থীর আচরণের ক্রমোন্নতির হার মূল্যায়নের মধ্যে দিয়ে নির্ণয় করা হয়।
মূল্যায়নের উদ্দেশ্য
➤ শিশুদের প্রত্যাশিত আচরণ এবং আচরণের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা।
➤ একটি শিশুর অর্জিত গুণাবলীর ও দক্ষতা পরীক্ষা করা।
➤ শিশুদের সমস্যা নির্ধারণ ও সমাধান করা।
➤ ডায়াগনস্টিক বা নির্ণায়ক ও রেমিডিয়াল বা প্রতিকার মূলক শিক্ষার জন্য মূল্যায়ন বিশেষ প্রয়োজনীয়।
➤ সামগ্রিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা।
➤ শিক্ষণ ও শিখনকে মূল্যায়ন বা যাচাই করা।
➤ শিক্ষাদান পদ্ধতির উদ্দেশ্য ও প্রয়োগ বোঝা এবং বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম পরীক্ষা করা।
➤ পাঠক্রম পাঠ্যপুস্তক এবং পাঠদান পদ্ধতি উন্নত করা ।
➤ শিক্ষার্থীর সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভাগ করা সম্ভব হয়।
➤ শিক্ষকের দক্ষতাএবং সাফল্য পরিমাপ করা। শিশুদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক চাহিদা পূরণ করা।
➤ প্রকৃত শিখনের উপযোগী কার্যকরী পদ্ধতি এবং কৌশল আবিষ্কার করা।
➤ পরীক্ষা পদ্ধতির প্রয়োজনীয় সংস্কার করা.
মূল্যায়নের গুরুত্ব
➤ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করা।
➤ এটি শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে।
➤ শিশুদের সমস্যা সহজেই খুজে বের করা যায় মূল্যায়নের মাধ্যমে।
➤ শিশুদের অগ্রগতিতে সাহায্য করে মূল্যায়ন।
➤ মূল্যায়ন শিক্ষাগত এবং পেশাগত নির্দেশিকা প্রদান করে।
পরিমাপ
কোন বস্তু বা ঘটনার একটি বৈশিষ্ট্য সংখ্যাবাচক শব্দ দ্বারা প্রকাশ করার প্রক্রিয়ায় হলো পরিমাপ। অবশ্য পরিমাপের সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করার জন্য যুক্তিগ্রাহ্য নিয়ম থাকা জরুরি।
এক কথায় বলা যায়, পরিমাপ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার দ্বারা কতগুলো নির্দিষ্ট নিয়মানুসারে শিক্ষার্থীর বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্যকে ( মানসিক ও শিক্ষাগত) সাংখ্যমান দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষার্থীর মানসিক বা শিক্ষাগত বৈশিষ্ট্যের পরিমাণগত সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারি।
পরিমাপের বৈশিষ্ট্য
➤ পরিমাপের দ্বারা কোন বস্তু বা ঘটনার একটি বৈশিষ্ট্য সংখ্যাবাচক শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
➤ পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্দেশ করা হয়।
➤ পরিমাপের নিয়ম অবশ্যই সর্বগ্রাহ্য হওয়া প্রয়োজন।
MCQ
1. কোনটি সত্য লেখ।
(a) মূল্যায়ন হল সার্বিক নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা*
(b) শিখনকেই মূল্যায়ন বলা হয়।
(c) পরীক্ষা পদ্ধতির প্রয়োজনীয় সংস্কার কাখনই সম্ভব নয়।
(d) কেবল পরিমাণগত হয় মূল্যায়ন
2. মূল্যায়নের পরিধি নয়?
(a) শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশ সাধন।
(b) শিক্ষার স্থিরীকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ।
(c) শিক্ষার্থীকে শিক্ষাগত ও বৃত্তিগত নির্দেশনাদান।
(d) শিখনের সমাপ্তি মূল্যায়ন
3. মূল্যায়ন একটি—
(a) নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া
(b) ধারাবাহিক প্রক্রিয়া
(c) স্বয়ংশোধন প্রক্রিয়া
(d) উপরের সবগুলি
4. শিখনের উদ্দেশ্য—
(a) শিখনের উদ্দেশ্য নির্দিষ্টকরণে মূল্যায়নের ভূমিকা দেখা যায়
(b) শিখন অভিজ্ঞতার কার্যকারিতা বিচারে মূল্যায়নের ভূমিকা দেখা যায়
(c) মূল্যায়ন কৌশলের সার্থকতা বিচারে মূল্যায়নের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
(d) উপরের সবগুলি
5. নীচের কোনটি সঠিক নয় ?
শিক্ষা কর্মসূচীর মূল্যায়ন-
(a) অর্জিত জ্ঞানের গুণগত এবং পরিমাণগত বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করা হয়।
1 Comment